সময়টা ২০০০ সাল। অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডের (অস্কার) মঞ্চে ডাক পড়ে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির। কারো হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার জন্য নয়। খোদ অভিনেত্রীই প্রথমবার অস্কার গ্রহণ করবেন। কিন্তু সেই অবিস্মরণীয় রাতটি কেবল ‘গার্ল, ইন্টারাপ্টেড’ সিনেমার জন্য সেরা সহ-অভিনেত্রীর ট্রফি জয়ের জন্য আলোচিত ছিল না। খবরের শিরোনামে যা হয়েছিল সেটার জন্য জোলি কিংবা তার পরিবার, কেউই প্রস্তুত ছিলেন না। যা সত্যিই শিরোনামে এসেছিল তা হল, ভ্যানিটি ফেয়ার আফটারপার্টিতে তার ভাই জেমস হ্যাভেনের ঠোঁটে একটি দ্রুত চুম্বন। একটি ছবি, এবং গুজব ছড়িয়ে পড়ে, ভ্রু কুঁচকে যায় সবারই। ট্যাবলয়েডগুলোও মুখরোচক খবরে মেতে উঠলো। অস্কার জয়ের আনন্দে উচ্ছ্বসিত জোলি তার অনুভূতি প্রকাশের সময় চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘আমি হতবাক, এবং আমি এখন আমার ভাইয়ের (জেমস) প্রেমে পড়েছি। সে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল যে সে আমাকে ভালোবাসে, এবং আমি জানি সে আমার জন্য খুব খুশি।’ বিষয়টি এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো। বোনের অস্কার প্রাপ্তিতে ভাই খুশি হবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পার্টিতে তার ভাই জেমস হ্যাভেন জোলিকে জড়িয়ে ধরে তার ঠোঁটে যে চুম্বন এঁকেছিলেন সেটাই ক্যামেরাম্যানের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেল! পারিবারিক এই সাধারণ মুহূর্ত হঠাৎ করেই তাদের সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা-কল্পনায় ভরা একটি আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়। ভাইবোনের একটি ঘনিষ্ট মুহূর্ত মিডিয়ায় ঝড় তুলেছিল সেসময়। এর কারণ, পশ্চিমা বিশ্বের সংস্কৃতি। ওখানকার কালচারে সাধারনত প্রেমিক-প্রেমিকাই ঠোঁটে চুমু খায়। ভাইয়ের ঠোঁটে চুমু খাওয়ায় স্বভাবতই তাদের মধ্যে ভিন্ন সম্পর্ক নিয়ে মিডিয়ায় ঝড় উঠে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন বিব্রত ছিলেন জোলি। এখনো মাঝেমধ্যে তাকে এই প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয়। যদিও সেসময়ই এর জবাব দিয়েছেন অভিনেত্রী। ২০০৭ সালে ডেইলি মেইলের এক সাক্ষাৎকারে জোলির ভাই জেমস হ্যাভেন স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমি অ্যাঞ্জিকে ফরাসি চুম্বন দেইনি। এটা ছিল সহজ এবং সুন্দর কিছু। আমি তাকে অস্কার জয়ের জন্য অভিনন্দন জানাই এবং ঠোঁটে একটি চুম্বন দিয়েছিলাম। কিন্তু একটি বড় জিনিস হয়ে ওঠে। কোনও নাটকীয়তা নয়, কেবল পারিবারিক ভালোবাসা ছিল এটি।’ প্রথম অস্কার জয়ের কয়েক মাস পরে এক সাক্ষাৎকারে অ্যাঞ্জেলিনা নিজেই গুজবের অবসান ঘটিয়েছিলেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন, ‘আমার বাবা-মা সত্যিই সেই মুহূর্তটি পছন্দ করেছিলেন এবং এটাই সর্বদা গুরুত্বপূর্ণ।’ পারিবারিক ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলোর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কতটা সহজেই স্পটলাইটে পরিণত করা হয়, এর পরিণতি প্রসঙ্গে জোলি বলেছিলেন, ‘এটা হতাশাজনক ছিল যে এত সুন্দর এবং বিশুদ্ধ কিছুকে সার্কাসে পরিণত করা যেতে পারে।’ তিনি জানান, সেই চুম্বন কোনো কেলেঙ্কারি ছিল না, এটি ছিল ভাই এবং বোনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতার একটি সহজ কাজ, যা প্রকাশ্য মুহূর্তে ধরা পড়েছিল। ঘটনাটি সম্প্রতি আবারও সামনে এসেছে ইন্টারনেটের কল্যানে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ভিডিও ক্লিপটি আবারও আপলোড করেছে একাধিক নেটিজেন। তাই এ বিষয়টি আবারও সমালোচনা তৈরি করছে। তবে জোলির পক্ষ থেকে তার ভক্তরা পুরনো সাক্ষাৎকার এবং জোলির বিবৃতি মন্তব্যের ঘরে পোস্ট করছেন। উল্লেখ্য, ২০০০ সালের অস্কার অ্যাঞ্জেলিনা জোলির তারকাখ্যাতি ও উত্থানের জন্য সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কিন্তু এই আনন্দময় ঘটনার পিছনে একটি কোমল পারিবারিক গল্প ছিল, যেটাকে ভুল বোঝাবুঝি এবং ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল। এদিকে কাজের সূত্রে বর্তমানে ‘সল্ট-২’ সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। এটি তারই অভিনীত ‘সল্ট’ সিনেমার সিক্যুয়াল। সিনেমাটি ২০২৬ সালে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ-২’ চার্লিজ অ্যাঞ্জেলস’ ও ‘কোশ্চার’ নামের সিনেমাগুলোও তা হাতে রয়েছে। তিনি জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক শুভেচ্ছাদূত হয়েও কাজ করছেন। সংস্থাটির হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ন। বাংলাদেশেও তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসেছিলেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

প্রথম অস্কার প্রাপ্তির ঘটনা নিয়ে এখনো বিব্রত জোলি
- আপলোড সময় : ১১-০৬-২০২৫ ০৭:৫৪:৫৮ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১১-০৬-২০২৫ ০৭:৫৪:৫৮ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ